• শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১৮ অপরাহ্ন

টিসিবির পণ্য ফুরালেও লাইন ফুরায় না

মাসুম খান / ৪৯ Time View
সময় : শনিবার, ৮ মার্চ, ২০২৫

বগুড়ায় কম দামের তেল, চিনি, ডাল, ছোলা কিনতে মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ট্রাকে। রমজান মাসে রোজা রেখে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও মানুষ টিসিবির পণ্য পাচ্ছেন না। অনেকে হতাশ হয়ে মনোকষ্ট নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

বরাদ্দের চেয়ে ক্রেতা বেশি হওয়ায় দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও অনেক সুবিধাভোগী পণ্য পাচ্ছেন না। ফলে হতাশা থেকে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে।

বগুড়ায় প্রায় ৪৫ লাখ মানুষের বসবাস। সেখানে শুধু বগুড়া পৌর এলাকার ২৫টি পয়েন্টে টিসিবির পণ্য বিক্রি হয়। সামান্য বরাদ্দ থাকায় প্রতিদিন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। প্রতি পয়েন্টে ৪০০ ক্রেতা পণ্য কেনার সুযোগ পেলেও লাইন দিচ্ছেন হাজারো মানুষ।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বগুড়া শহরের কালিতলা, জেলখানা মোড়, সেউজগাড়ি ফুলতলা বাজার, মালতিনগর বটতলা পয়েন্টে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হয়। পণ্যের মধ্যে ছিল ছোলা, চিনি, মসুরের ডাল ও সয়াবিন তেল। সস্তায় পণ্য বিক্রির খবর শুনে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়েন। ফলে প্রতিটি পয়েন্টে দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। যদিও প্রতিটি ট্রাকে মাত্র ৪০০ ক্রেতার জন্য বরাদ্দ; কিন্তু লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন প্রায় দুই হাজার মানুষ।

বগুড়া শহরের বউবাজার এলাকার রিকশাচালক হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, ‘বাজারের তুলনায় কম দামে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে শুনে জেলখানা মোড়ে এসেছিলাম। কিন্তু দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকেও কিছু পেলাম না। এ ভোগান্তি শুধু আমার নয়, পুরো বগুড়াবাসীর। বরাদ্দ বাড়ানো জরুরি।’

রিকশাচালক হেদায়েতুল ইসলামের মতো অনেকেই শহরের বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘ সারিতে অপেক্ষা করে খালি হাতে ফিরে গেছেন। কালিতলা বাজারে পণ্য নিতে আসা ওলেদা বেগম বলেন, ‘প্রায় তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও কিছু পেলাম না। পণ্য শেষ হয়ে গেছে।’

সপ্তাহে একদিন করে পর্যায়ক্রমে শহরের ২৫টি পয়েন্টে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার শহরের কালিতলা, জেলখানা মোড়, সেউজগাড়ি ফুলতলা বাজার, মালতিনগর বটতলা পয়েন্টে পণ্য বিক্রি করা হয়। পণ্যের মধ্যে ছিল ছোলা, চিনি, মশুরের ডাল ও সয়াবিন তেল। ৪৫০ টাকার প্যাকেজে থাকছে ১০০ টাকা করে দুই লিটার সয়াবিন তেল, ৬০ টাকা দরে দুই কেজি মশুরের ডাল, ৭০ টাকা করে এক কেজি চিনি ও ৬০ টাকা করে এক কেজি ছোলাবুট।

মদিনা ট্রেডার্সের ডিলার রাজিব মাহমুদ বলেন, ‘সকাল থেকেই দীর্ঘ লাইন ছিল। ক্রেতাদের বেশির ভাগই মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে এসেছেন। বরাদ্দ ছিল ৪০০ জনের; কিন্তু লাইনে ছিলেন অন্তত দেড় হাজার মানুষ। বাকিরা খালি হাতে ফিরে গেছেন।’

কালিতলাহাট পয়েন্টে টিসিবি পণ্য বিক্রি করে বিসিক ফুলবাড়ী এলাকার মেসার্স মম ট্রেডার্স। এ প্রতিষ্ঠানের ডিলার শরিফুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে দীর্ঘ সারি ছিল আমার পয়েন্টে। বরাদ্দ ছিল ৪০০ জনের; কিন্তু লাইনে ছিলেন অন্তত ৭০০ জন। বাকিরা খালি হাতে ফিরে গেছেন।

টিসিবি বগুড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান সহকারী পরিচালক সাদ্দাম হোসাইন  বলেন, ‘প্রতিদিন একেকটি ট্রাকে ৪০০ জনের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। যে আগে লাইনে দাঁড়াতে পারবেন, তিনিই আগে পণ্য পাবেন।’ গত বুধবার সকালে শহরের শহীদ খোকন পার্কের সামনে বগুড়ায় টিসিবির ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে পণ্য বিক্রির কার্যক্রম উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা। এরপর থেকে প্রতিদিনই পণ্যের চেয়ে কয়েকগুণ মানুষ টিসিবির পণ্য কিনতে ট্রাকের পেছনে দাঁড়াচ্ছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category