• শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ০৩:২৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

বাংলাদেশকে তিন বছরে ৩ বিলিয়ন ডলার করে দেবে বিশ্বব্যাংক

মাসুম খান / ১৩ Time View
সময় : মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০২৫

আগামী তিন বছর বাংলাদেশকে তিন বিলিয়ন ডলার করে অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সোমবার (১৪ জুলাই) রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ প্রতিশ্রুতি দেন দক্ষিণ এশিয়ায় বিশ্বব্যাংকের নবনিযুক্ত ভাইস প্রেসিডেন্ট জোহানেস জুট। এ সময় ভুটানের নতুন বিভাগীয় পরিচালক জিন পেসমও দেখা করেন।

বৈঠকে ভাইস প্রেসিডেন্ট জোহানেস জুট বাংলাদেশের প্রতি ভালোবাসা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির প্রতি দৃঢ় সমর্থন ব্যক্ত করেন এবং অর্থনৈতিক খাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার এজেন্ডার জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রশংসা করেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টার প্রশংসা করে, বিশেষভাবে আর্থিক ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জিং বিষয় মোকাবিলার প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘ভালো কাজ করার জন্য আপনাকে এবং আপনার দুর্দান্ত দলকে ধন্যবাদ। আমরা আমাদের যাত্রা চালিয়ে যেতে এবং বাংলাদেশের জনগণের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ভাগ করে নিতে প্রস্তুত।’

এ সময় তিনি গত বছরের জুলাই আন্দোলেনে প্রাণ হারানো শিক্ষার্থীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এটিকে ‘বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত সবার জন্য একটি অত্যন্ত মর্মস্পর্শী মুহূর্ত বলে অভিহিত করেন।

জোহানেস জুট নারীর ক্ষমতায়নে ড. ইউনূসের কাজের প্রশংসা করে বলেন, ‘আমরা আপনাকে সমর্থন অব্যাহত রাখব। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় বাংলাদেশে একটি অগ্রণী নারী শিক্ষা উপবৃত্তি কর্মসূচি রয়েছে, যা অন্যান্য দেশেও অনুকরণ করা হয়েছে।’

 

 

বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে যুবস মাজের জন্য সুযোগ তৈরিতে সহায়তা করবে জানিয়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক গত অর্থবছরে বাংলাদেশে তিন বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থায়ন করেছে এবং আগামী তিন বছরেও একই ধরনের সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

 

 

প্রধান উপদেষ্টা তার সমর্থন ও প্রশংসার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আমরা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করি, তখন এটি একটি বিপর্যয়কর অঞ্চলের মতো ছিল, ভূমিকম্পের পরের স্থানের মতো। আমাদের কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। তবু সব উন্নয়ন অংশীদার আমাদের সমর্থন করেছিল এবং এটি আমাদের অনেক সাহায্য করেছিল; যা আমাদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছিল।’

 

 

অধ্যাপক ইউনূস জুলাই আন্দোলনে তরুণদের ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, ‘তারা এ জাতিকে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছিল। গত জুলাই মাসে আমাদের তরুণরা যা করেছে, তা ঐতিহাসিক ছিল। বিশেষ করে আমাদের মেয়েরা এবং নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। আমরা ১৪ জুলাই নারী দিবস পালন করছি। তাদের ত্যাগ বৃথা যেতে দেওয়া উচিত নয়। তরুণরা আমাদের দেশের কেন্দ্রবিন্দু। আমাদের তরুণদের ওপর মনোনিবেশ করা এবং তাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা উচিত।’

 

 

বিশ্বব্যাংককে বাংলাদেশকে কেবল একটি ‘ভৌগোলিক সীমানা’ হিসেবে না দেখার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি তার চেয়ে অনেক বড়। যদি বাংলাদেশ সমৃদ্ধ হয়, তাহলে সমগ্র দক্ষিণ এশীয় অঞ্চল সমৃদ্ধ হবে। যদি আমরা নিজেদের আলাদা করি, তাহলে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি না। আমাদের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যসুবিধা এবং পরিবহন বিকাশ করতে হবে। আমাদের একটি সমুদ্র আছে। এটি আমাদের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।’

 

 

‘বেশির ভাগ দেশে তরুণদের অভাব রয়েছে, তাই আমরা তাদের কারখানা এখানে আনতে বলেছি। আমরা শিল্পকে উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহ করব’, বলেন তিনি।

সভায় প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফা সিদ্দিকীও উপস্থিত ছিলেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category